বন্যার পানি নামার পর সরকার কৃষক ও খামারিদের সহযোগিতা করবে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীরবিক্রম বলেছেন, বন্যার পানি নামার পর সরকার কৃষক ও খামারীদের ঘুরে দাঁড়াতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পর্যাপ্ত অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী মন্ত্রণালয়ের হাতে রয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

মন্ত্রী আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ্ কামাল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহমেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মায়া চৌধুরী বলেন, এ বছর হাওরে অকাল বন্যা, ঘূর্ণিঝড় মোরা, পাহাড় ধস ও উত্তরাঞ্চলে আগাম বন্যার মত চারটি বড় দুর্যোগ সরকার সাফল্যের সাথে মোকাবিলা করছে। সরকারের পূর্ব প্রস্তুতি, দুর্যোগকালে তাৎক্ষণিক ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের কারণে প্রত্যেকটি দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সরকার প্রত্যেকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত বন্যা ও ত্রাণ কার্যক্রমের খোঁজখবর নিচ্ছেন। মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে থেকে বন্যা পরিস্থিতি ও ত্রাণ বিতরণ তদারকি করছেন। তিনি মধ্যাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের জেলাসমূহের জেলা প্রশাসকদের অতি দ্রুত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে বন্যার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি গ্রহণ করার আহবান জানান।

তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য, ৩৬ হাজার ৮৪০ মেট্রিক টন চাল, ৫৯ কোটি ২৫ লাখ নগদ টাকা, গৃহনির্মাণের জন্য ৩০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৯ লাখ টাকা, কর্মসংস্থানের জন্য ইজিপিপি প্রকল্প থেকে ৮২ কোটি ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগাম বন্যায় ফসলহানির কারণে হাওর অঞ্চলের জেলাসমূহে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার পরিবারকে ভিজিএফ দেয়া হয়েছে যা আগামী এপ্রিল/২০১৮ পর্যন্ত চলমান থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, ৩০ মে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় মোরায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত থাকা সত্বেও সরকার সে দুর্যোগ সফলভাবে মোকাবিলা করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে বিতরনের জন্য ২ হাজার ৯২১ মেট্রিক টন চাল, ১ কোটি ৬৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা, গৃহ নির্মাণের জন্য ১ হাজার বান্ডিল ঢেউটিন ও ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।

তিনি জানান, এতে ১৬৬ জন মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য ১ হাজার ১২০ মেট্রিকটন চাল, ২ কোটি ২২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গৃহ নির্মাণের জন্য ৫০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও ১৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। নিহত প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারের জন্য ৩০ কেজি চাল ও ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে।

সিলেট, মৌলভীবাজার ও উত্তরাঞ্চলের আগাম বন্যা প্রসঙ্গে মায়া চৌধুরী বলেন, বন্যা প্লাবিত এসব জেলার জন্য ১২ হাজার মেট্রিকটন চাল, ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৩ হাজার বান্ডিল ঢেউটিন ও ৯০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় পানি বিশুদ্ধকরণ মোবাইল গাড়ি পাঠানো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর